গাজা সিটিতে স্থল অভিযানের প্রস্তুতিতে বিমান থেকে ত্রাণ সহায়তা বন্ধ করতে পারে ইসরায়েল

গাজা সিটিতে একটি স্থল অভিযানের প্রস্তুতি হিসেবে বিমান থেকে মানবিক ত্রাণ সহায়তা দেওয়া বন্ধ করার পরিকল্পনা করছে ইসরায়েল। শুক্রবার ইসরায়েলের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম কান জানিয়েছে, লাখ লাখ ফিলিস্তিনি বাসিন্দাকে শহর ছেড়ে দক্ষিণে যেতে বাধ্য করার লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

চ্যানেলটি এক ইসরায়েলি নিরাপত্তা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানায়, গাজা সিটির আট লাখের বেশি বাসিন্দাকে শহরটি ছেড়ে যাওয়ার জন্য স্পষ্ট বার্তা দিতে এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। ওই কর্মকর্তা দাবি করেন, দক্ষিণে বাস্তুচ্যুত বেসামরিক নাগরিকদের গ্রহণের জন্য অবকাঠামো প্রস্তুত রয়েছে। প্রতিবেদন অনুসারে, আগামী ১০ দিনের মধ্যে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বাসিন্দাদের এলাকা ছাড়ার নির্দেশ জারি করতে পারে।

ইসরায়েলের রাজনৈতিক নেতৃত্বের নির্দেশে এই কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, যা মানবিক ত্রাণের জন্য চলমান ‘কৌশলগত বিরতি’ শেষ করার অংশ। আন্তর্জাতিক চাপের কারণে এই বিরতি দেওয়া হয়েছিল, কারণ গাজার অবরুদ্ধ পরিস্থিতিতে খাদ্য সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে।

কান জানিয়েছে, মধ্য গাজার কিছু এলাকা এবং দক্ষিণের আল-মাওয়াসি অঞ্চলে আংশিক বিরতি বজায় থাকবে, যেখানে বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। গাজার প্রায় ২৪ লাখ মানুষের মধ্যে অর্ধেকের বেশি মানুষ এই শহরে বসবাস করে।

এদিকে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজা সিটিকে ‘বিপজ্জনক যুদ্ধ এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় ৬৩ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, এবং গাজার পুরো উপত্যকা এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে, যা দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে।

গাজায় মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। এছাড়া, এই নৃশংসতার জন্য ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে) গণহত্যার মামলার মুখোমুখি হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *