গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে কী আছে

গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির চুক্তি ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা শুক্রবার ভোরে অনুমোদন দেওয়ার মধ্য দিয়ে দুই বছর ধরা চলা যুদ্ধ বন্ধে চুক্তির প্রথম ধাপের সময় গণনা শুরু হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে কেবল ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি থাকা ফিলিস্তিনিদের মুক্তির বিনিময়ে গাজায় জিম্মিদের হস্তান্তর করা হবে। সেইসঙ্গে গাজায় ইসরায়েলি সৈন্যদের আংশিক তুলে নেওয়া হবে। রয়টার্স লিখেছে, যুদ্ধবিরতির আলোচনায় যুক্তদের সামনে আরও অনেক জটিলতা আছে, যে ধরনের জটিলতার কারণে আগের শান্তি উদ্যোগগুলো ব্যর্থ হয়েছে। খবর বিডিনিউজের।

যুদ্ধবিরতি ও সেনা প্রত্যাহার : শর্ত অনুযায়ী, ইসরায়েল সরকার অনুমোদন দিলে যুদ্ধবিরতি শুরু হবে। গতকাল শুক্রবার ভোরে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী পরে জানায়, দুপুর থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। গাজার বেসামরিক মানুষের সঙ্গে সংঘাত এড়াতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইসরায়েলি বাহিনী সরিয়ে নেওয়া হবে। গাজার প্রধান শহুরে এলাকা থেকে বাহিনী সরিয়ে নেওয়া হলেও উপত্যকার অর্ধেক অঞ্চল তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী শুক্রবার বলেছে, তারা বাহিনীকে তাদের নতুন অবস্থানে সাজাচ্ছে। জিম্মি মুক্তি : পুনরায় সামরিক বাহিনী মোতায়েনের আগে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গাজায় থাকা ৪৮ জিম্মির সবাইকে ইসরায়েলের হাতে তুলে দিতে হবে। ৪৮ জিম্মির মধ্যে ২০ জন বেঁচে আছেন বলে ধারণা করা হয়। অন্যদের দেহাবশেষ উদ্ধার করতে সময় লাগতে পারে বলে হামাস ইঙ্গিত দিয়েছে। কারণ সব সমাধিস্থল তাদের জানা নেই। ইসরায়েলের জিম্মি হস্তান্তর সমন্বয়কারী গাল হিরশ বৃহস্পতিবার বলেছেন, হামাস জিম্মিদের দেহাবশেষ খুঁজে না পেলে আন্তর্জাতিক একটি বাহিনী সহায়তা করবে। গাজায় থাকা জিম্মিদের মুক্তির পর বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলের কারাগারে থাকা ২৫০ বন্দিসহ তাদের হাতে জিম্মি ১৭০০ প্রাপ্তবয়স্ক ও ২২ শিশু–কিশোর–তরুণকেও মুক্তি দেওয়া হবে। সেইসঙ্গে ৩৬০ যোদ্ধার লাশও ফেরত দেবে। গাজার ফিলিস্তিনিদের গাজাতেই ছেড়ে দেওয়া হবে। আর ইসরায়েলিদের হত্যার অভিযোগ থাকা বন্দিদের গাজায় ছেড়ে দেওয়া হবে অথবা অন্য দেশে নির্বাসনে পাঠানো হবে। স্থায়ীভাবে পশ্চিম তীর ও ইসরায়েলে প্রবেশ করতে পারবে না তারা।

মানবিক সাহায্য : চুক্তির আওতায় মানবিক ত্রাণ সাহায্য ঢুকবে গাজায়। উত্তর ও দক্ষিণ গাজার প্রধান দুটি সড়ক ধরে ত্রাণ বহর চলাচলের সুযোগ দেওয়া হবে। ইসরায়েলি দুজন কর্মকর্তা বলছেন, শিগগিরই গাজায় প্রতিদিন ৬০০টি করে ট্রাক ঢুকবে। ইসরায়েলি এক কর্মকর্তা বলছেন, ত্রাণের ট্রাকগুলোর বেশিরভাগ খাদ্য সরবরাহ, চিকিৎসা উপাদান, আশ্রয় সরঞ্জাম, জ্বালানি ও রান্নার গ্যাস নিয়ে ঢুকবে। পানি সরবরাহ লাইন, পয়ঃনিষ্কাশন ও বেকারিগুলোর মত ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো মেরামতে জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামও প্রবেশ করতে দেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *