গাজা উপত্যকায় প্রায় দুই বছর ধরে চলা যুদ্ধের পর আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ইসরায়েলবিরোধী ক্ষোভ ক্রমশ বেড়ে চলেছে। এমন পরিস্থিতিতে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মঙ্গলবার সতর্ক করে বলেছেন, দেশটি কূটনৈতিকভাবে একঘরে হয়ে পড়তে পারে, যা অনেক বছর স্থায়ী হতে পারে। তিনি এই অবস্থাকে মোকাবিলা করতে ইসরায়েলের স্বনির্ভরতা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন।
ইসরায়েলের অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনে বক্তব্য রাখার সময়, নেতানিয়াহু বলেন, ইসরায়েলকে বিদেশি বাণিজ্যের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে দেশের অস্ত্রশিল্প উন্নত করতে হবে। তিনি আরও বলেন, “আমাদের অস্ত্রশিল্পকে শক্তিশালী করতে হবে। আমাদের হাতে বিকল্প নেই, আগামী কয়েক বছর আমরা একঘরে হওয়ার চেষ্টা মোকাবিলা করব।”
নেতানিয়াহু তার ভাষণে গাজা যুদ্ধ এবং তার পরবর্তী আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়ার প্রেক্ষাপটে এক ধরনের বিচ্ছিন্নতা এবং কূটনৈতিক চাপ অনুভব করছেন। যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ তীব্র হচ্ছে, এবং তিনি নিজের দেশের প্রতি এই আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া স্বীকার করছেন—যা তার জন্য এক বিরল স্বীকারোক্তি।
বিশ্বজুড়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ার কারণ হিসেবে জাতিগত নিধনযজ্ঞ এবং গাজার ওপর অব্যাহত হামলার অভিযোগের পাশাপাশি, কিছু দেশ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এতে ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, যুক্তরাজ্য, স্পেন, ইতালি ইত্যাদি দেশগুলো উল্লেখযোগ্যভাবে ইসরায়েলের অস্ত্র বাণিজ্যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। তবে, যুক্তরাষ্ট্র এখনও কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি, এবং ইসরায়েলকে বিশ্বজুড়ে এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা না আরোপের জন্য সতর্ক করেছে।
নেতানিয়াহুর মন্তব্য আরও তীব্র হয়েছে যখন তিনি চরম ইসলামপন্থী এজেন্ডা এবং কাতারের মতো প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মাধ্যমে বিশ্বজনমতকে প্রভাবিত করার চেষ্টা নিয়ে অভিযোগ করেন। এর ফলে ইসরায়েল কূটনৈতিক বিচ্ছিন্নতা অনুভব করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এদিকে, ইসরায়েলের বিরোধী দলীয় নেতা ইয়ার লাপিদ নেতানিয়াহুর এই বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, “বিচ্ছিন্নতা কোনো নিয়তি নয়, এটি নেতানিয়াহুর ব্যর্থ নীতির ফল।”