ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে প্রথমবারের মতো নেতানিয়াহুর ওপর স্লোভেনিয়ার ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা

ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু-এর ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য দেশ স্লোভেনিয়া। এটি ইইউ সদস্য দেশগুলোর মধ্যে প্রথম ঘটনা, এবং বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে।

এর আগে অগাস্টে, স্লোভেনিয়া ইসরাইলের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল, এবং এটি ছিল প্রথম ইইউ দেশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া। সেই সাথে স্লোভেনিয়া, ইসরাইলি দুই মন্ত্রী—ইতামার বেন গভির এবং বেজালেল স্মোত্রিচ-কে ‘অবাঞ্ছিত ব্যক্তি’ ঘোষণা করেছিল। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল যে, তারা ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ‘গণহত্যামূলক বক্তব্য’ দিয়েছেন।

২০২৪ সালের জুনে, স্লোভেনিয়া, নরওয়ে, স্পেন এবং আয়ারল্যান্ড এর পথে হেঁটে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। পাশাপাশি, তারা গাজার ইসরাইলি আগ্রাসনের তীব্র সমালোচনা করে আসছে। স্লোভেনিয়ার প্রেসিডেন্ট নাতাশা পির্ক মুসা সরাসরি গাজার ইসরাইলি হামলাকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বলেন, “আমরা হলোকাস্ট ঠেকাতে পারিনি, আমরা রুয়ান্ডার গণহত্যা ঠেকাতে পারিনি, আমরা স্রেব্রেনিৎসার গণহত্যা ঠেকাতে পারিনি। কিন্তু গাজার গণহত্যা আমরা অবশ্যই ঠেকাতে হবে। এখন আর কোনো অজুহাত নেই।”

গাজার অবস্থা চরম সংকটপূর্ণ। ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরাইলি হামলা শুরুর পর থেকে প্রায় ৬৫ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে এবং গাজার উপত্যকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সেখানে দুর্ভিক্ষ মারাত্মক আকার ধারণ করেছে, যা পরিস্থিতিকে আরও বিপজ্জনক করে তুলেছে।

অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) এবং আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)-এ গাজার ইসরাইলি হামলার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগে মামলা চলছে। আইসিসি ২০২৩ সালের নভেম্বরে নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োযভ গ্যালান্ট-এর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল।

স্লোভেনিয়ার এই পদক্ষেপ, ইসরাইলের প্রতি আন্তর্জাতিক চাপ এবং ফিলিস্তিনিদের অধিকার ও স্বাধীনতার প্রশ্নে একটি দৃঢ় অবস্থান গ্রহণের প্রতীক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *