আমি বললেই গাজায় ফের অভিযান চালাতে পারে ইসরায়েল

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত মানতে ব্যর্থ হলে ইসরায়েলকে তিনি আবারও সামরিক অভিযান চালানোর অনুমতি দিতে পারেন। সিএনএন–কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ইসরায়েলি বাহিনী আবার রাস্তায় ফিরতে পারে– কেবল আমি সেটা বললেই। গত বুধবার এক সংক্ষিপ্ত টেলিফোন সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, হামাস নিয়ে যা চলছে, তা খুব দ্রুত সমাধান করা হবে। মার্কিন সরকারের সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত হামাসকে নিয়ে ইসরায়েল অভিযোগ করছে, তারা এখনও সব জিম্মিকে–জীবিত ও মৃত হস্তান্তর করেনি, যা যুদ্ধবিরতির শর্তের অংশ ছিল। এই কারণে গাজায় পাঠানো মানবিক সহায়তা বিলম্বিত হচ্ছে বলে জাতিসংঘকে জানিয়েছে ইসরায়েল। তবে যুদ্ধবিরতি এখনও টিকে আছে। ট্রাম্পের ২০ দফার শান্তি পরিকল্পনার চতুর্থ দফায় বলা হয়েছে, ইসরায়েল প্রকাশ্যে চুক্তি মেনে নেওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে হামাসকে সব জিম্মি–জীবিত ও মৃত–ফেরত দিতে হবে। খবর বিডিনিউজের।

বুধবার সকাল পর্যন্ত জীবিত ২০ জন জিম্মি ফেরত এসেছে, তবে হামাস এখন পর্যন্ত ৮টি মরদেহ হস্তান্তর করেছে, যার একটি ইসরায়েলি নয় বলে জানিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। আরও কয়েকটি মরদেহ ফেরত যাবে বলে সূত্র জানিয়েছে। ট্রাম্প বলেন, জীবিত জিম্মিদের উদ্ধার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তবে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস করে না যে, হামাস ইচ্ছাকৃতভাবে চুক্তি ভঙ্গ করছে। তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে হামাস আশ্বাস দিয়েছে, তারা সব মরদেহ খুঁজে বের করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে। দুই বছরের যুদ্ধে বহু দেহ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে থাকতে পারে বলেও জানিয়েছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজায় সামপ্রতিক দিনগুলোতে প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সংঘর্ষ বেড়েছে, যার মধ্যে প্রকাশ্য মৃত্যুদণ্ডের ঘটনাও রয়েছে। এর আগে ট্রাম্প সতর্ক করেছিলেন, হামাস নিরস্ত্র না হলে আমরাই তাদের নিরস্ত্র করব। তার পরিকল্পনার ষষ্ঠ দফায় বলা হয়েছে, সব জিম্মি ফেরত এলে যারা অস্ত্র ছাড়বে ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান মেনে নেবে, সেই হামাস সদস্যদের সাধারণ ক্ষমা দেওয়া হবে। যারা গাজা ছাড়তে চায়, তাদের নিরাপদে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে। সিএনএন জানতে চায়–যদি হামাস নিরস্ত্র না হয়, তাহলে কী হবে? ট্রাম্প বলেন, আমি সেটা ভাবছি। আমি বললেই ইসরায়েল আবার রাস্তায় ফিরবে। ইসরায়েল যদি যেতে পারে, তারা ওদের শেষ করে ফেলবে। তিনি বলেন, আমাকেই ওদের (ইসরায়েলি বাহিনী ও নেতানিয়াহুর সরকার) থামাতে হয়েছে। আমি ‘বিবি’–র (নেতানিয়াহু) সঙ্গে এ নিয়ে সরাসরি কথা বলেছি। তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভবিষ্যতের শান্তি প্রচেষ্টায় আশাবাদী। তিনি বলেন, এই চুক্তির সঙ্গে ৫৯টি দেশ যুক্ত আছে। আমরা এমন কিছু কখনও দেখিনি। সবাই এখন অংশ নিতে চায় আব্রাহাম চুক্তিতে–এখন যখন ইরান আর সমস্যা নয়। ট্রাম্প আরও বলেন, তিনি রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করতেও কাজ করছেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি আজ শুক্রবার হোয়াইট হাউজে যাবেন বলে জানান তিনি। আমি রাশিয়ার বিষয়টা নিয়েও কঠোর পরিশ্রম করছি, বলেন ট্রাম্প। কোনটা বড় অর্জন হবে–মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি না রাশিয়া–ইউক্রেনে? ভাবছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *