আপস করব না, প্রয়োজনে ব্যক্তিগতভাবে চরম মূল্য দেব

ভারতের বিশাল কৃষিখাত ও পশুপালন খাত উন্মুক্ত করা ও রাশিয়ার তেল ক্রয় বন্ধ করা নিয়ে দ্বিমতের কারণে দেশটির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পাঁচ দফা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য আলোচনা ব্যর্থ হয়ে যায়।

রয়টার্স জানিয়েছে, মোদী তার ভাষণে মার্কিন শুল্ক বা বাণিজ্য আলোচনার কথা সরাসরি উল্লেখ করেননি।

ট্রাম্প জানিয়েছেন, রাশিয়ার তেল কেনার শাস্তিস্বরূপ ভারতের ওপর আরোপ করা নতুন শুল্ক ২৮ অগাস্ট থেকে কার্যকর হবে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্ত ‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক’ আর ‘ভারত তার জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় সব ধরনের পদক্ষেপ নেবে’।

ইউক্রেইন যুদ্ধ শেষ করার জন্য রাশিয়ার ওপর চাপ সৃষ্টি করতে মস্কোর সঙ্গে বাণিজ্য করা দেশগুলোর ওপরও অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প; যাকে ‘দ্বিতীয় পর্যায়ের নিষেধাজ্ঞা’ বলছে ট্রাম্প প্রশাসন।

রাশিয়ার তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা চীন। বুধবার ট্রাম্প বলেছেন, রাশিয়ার তেল কেনার জন্য ভারতের ওপর যেমন অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে সেরকম চীনের ওপরও আরোপ করা হতে পারে। তবে যুক্তরাষ্ট্র এখনও চীনের বিরুদ্ধে ওই ধরনের শাস্তিমূলক কোনো শুল্ক ঘোষণা করেনি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিরল মৃত্তিকার মজুদের মতো এ ধরনের অন্যান্য পণ্য নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দরকষাকষির উপায় থাকায় চীন এখনও ওই ধরনের শুল্ক থেকে রেহাই পেয়ে আসছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দরকষাকষি করার মতো ওই ধরনের কোনো পণ্য ভারতের নেই।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিষয়ক সচিব দাম্মু রবি সাংবাদিকদের বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বৃদ্ধির কোনো যুক্তি নেই। তাই এটি একটি সাময়িক বিচ্যুতি, একটি সাময়িক সমস্যা যা দেশকে মোকাবেলা করতে হবে। কিন্তু আমাদের বিশ্বাস, সময়ে গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বিশ্ব সমাধান খুঁজে পাবে।”

ট্রাম্পের শুল্কের মোকাবেলায় সামনে অন্য অংশীদারদের কথা বিবেচনা করতে হতে পারে, এই ইঙ্গিত দেওয়ার জন্য ভারত পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেছে। তবে নয়া দিল্লির এসব পদক্ষেপ দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ককে কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থার দিকে চালিত করতে পারে।

মোদী সাত বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে প্রতিবেশী চীনে প্রথম সফরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছেন। একে ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্ক অবনতি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সম্ভাব্য মিত্রতা পুনর্বিন্যাসের ইঙ্গিত বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে।

ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুয়িজ ইনাসিও লুলা দ্য সিলভা বুধবার জানিয়েছেন, ট্রাম্পের শুল্কের মোকাবেলা কীভাবে করা যায় তা নিয়ে উন্নয়নশীল দেশগুলোর গোষ্ঠী ব্রিকসে আলোচনার উদ্যোগ নেবেন তিনি।

তিনি জানান, বৃহস্পতিবার তিনি মোদী, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং অন্য নেতাদের কল করার পরিকল্পনা করেছেন। রাশিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকাও ব্রিকসের অংশ।

ভারতীয় কর্মকর্তা রবি বলেছেন, “সমমনা দেশগুলো সহযোগিতা ও অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততা খুঁজে দেখবে যা পারস্পরিকভাবে সকল পক্ষের জন্য উপকারী হবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *