বাসে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টা, আটক ২

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) নৃবিজ্ঞান বিভাগের এক ছাত্রীকে চলন্ত বাসে ধর্ষণের চেষ্টা এবং ছিনতাইয়ের ঘটনায় দুই জনকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালত অজামিনযোগ্য দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন।

শুক্রবার (২২ আগস্ট) সকাল ৯টার দিকে কোটবাড়ি বিশ্বরোড থেকে সেন্টমার্টিন পরিবহনের একটি বাসে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন ভুক্তভোগী ছাত্রী। পরিকল্পিতভাবে বাসটি নির্ধারিত পথে না গিয়ে অন্যদিকে ঘুরে যায়। পরে সুয়াগাজী এলাকায় গিয়ে ইউটার্ন নেয়। এ সময় বাসে থাকা চালক, হেল্পারসহ কয়েকজন তাকে গহনা ও টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেয় এবং ছুরি ঠেকিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। প্রতিরোধ করলে অভিযুক্তরা ছাত্রীকে মারধর ও হাত-পা বেঁধে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করে। তবে তার অনুরোধে তাকে ফেলে না দিয়ে স্থানীয় একটি হোটেলে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে এবং দুজনকে আটক করে।

ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা ৯৯৯ এ কল করলে পুলিশ আসে। তবে বাস মালিক ও অপরাধীদের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আনার দাবিতে শিক্ষার্থীরা দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করলে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গেলেও উত্তেজনা কমাতে ব্যর্থ হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মধ্যস্থতায় আটক দুজনকে মোবাইল কোর্টে হাজির করা হলে তাদের দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

গ্রেফতাররা হলেন হোসেন আলী (২৫) ও আলী হোসেন (২৩)। পলাতকরা হলেন– পিচ্চি রাসেল (৩২), নূর আলম ও সৌরভ। সেন্টমার্টিন পরিবহনের মালিক চাঁন মিয়ার নামও অভিযুক্তদের তালিকায় এসেছে।

কুমিল্লা সদর দক্ষিণের ইউএনও রুবাইয়া খানম জানান, শিক্ষার্থীদের দাবির পর মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে শাস্তি কার্যকর করা হয়। কুমিল্লার পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান বলেন, বাকি তিন জনকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আবদুল হাকিম বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সেনাবাহিনীও পরিস্থিতি সামলাতে হিমশিম খাচ্ছিল, শেষ পর্যন্ত আদালতের রায়ের মাধ্যমে সমাধান হয়। উপাচার্য অধ্যাপক হায়দার আলী বলেন, একজন নারী শিক্ষার্থীকে হাত-পা বেঁধে মধ্যযুগীয় নির্যাতনের চেষ্টা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। অপরাধীদের বিরুদ্ধে দ্রুত চার্জশিট দিয়ে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *