তদন্তে উঠে এলো সুতা, দড়ির কৌশল ও স্বর্ণ চুরির রহস্য

রাজধানীর মৌচাকের ফরচুন শপিং মলে চুরির আগে প্রায় তিন মাস পর্যবেক্ষণ বা রেকি করে জড়িতরা। ঘটনার দিন মলের শৌচাগারের জানালায় সুতা ঝুলিয়ে রাখে। রাতে সেই সুতার সঙ্গে দড়ি বেঁধে ওপরে উঠে জানালার গ্রিল কেটে ভেতরে ঢোকে।

শুক্রবার রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানিয়েছে পুলিশ। শপিং মলে স্বর্ণের গয়নার দোকানে চুরির ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিবির যুগ্ম কমিশনার (প্রশাসন অ্যান্ড গোয়েন্দা-দক্ষিণ) মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম, যুগ্ম কমিশনার (গোয়েন্দা-উত্তর) মোহাম্মদ রবিউল হোসেন ভূঁইয়া, যুগ্ম কমিশনার, (সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড সাপোর্ট সেন্টার-দক্ষিণ) সৈয়দ হারুন অর রশীদ, ডিবি লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মোস্তাক সরকার, ডিএমপির মুখপাত্র উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান ও ডিবি লালবাগ বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার নূরে আলম।

ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন, শপিং মলের ভেতরে আগে থেকেই বোরকাসহ চুরির কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। চক্রটি সংগঠিত ও পেশাদার। তারা ২০২১ সালে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী মার্কেটে স্বর্ণ চুরির ঘটনায় জড়িত। জামিনে বেরিয়ে একই ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ে।

ফরচুন শপিং মলের সম্পা জুয়েলার্সে চুরির ঘটনা ঘটে ৮ অক্টোবর রাতে। ডিবি বলছে, এরপরই সদস্যরা ছায়া তদন্ত শুরু করেন। গত ৭২ ঘণ্টার অভিযানে বিভিন্ন জেলা থেকে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন- শাহিন মাতব্বর ওরফে শাহিন (৪৬), নুরুল ইসলাম (৩৩), উত্তম চন্দ্র সূর (৪৯) ও অনিতা রায় (৩১)। উদ্ধার করা হয়েছে চুরি হওয়া ১৯০ ভরি স্বর্ণ, সামান্য রূপা, একটি মোটরসাইকেল ও নগদ ১ লাখ ৭৭ হাজার ২০০ টাকা।

শফিকুল ইসলাম বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ, তথ্য-প্রযুক্তির ভিত্তিতে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রথমে চট্টগ্রাম থেকে শাহিনকে ও পরে বরিশাল থেকে আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে চক্রের সমন্বয়কারী নুরুলকে। চুরিকৃত স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়েছে ফরিদপুর থেকে। 

চুরির ঘটনার পর দোকান মালিক ৫০০ ভরি স্বর্ণের কথা দাবি করেছিলেন। বাকি স্বর্ণ কোথায়? জানতে চাইলে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এটি জানতে ডিবি তদন্ত অব্যাহত রেখেছে। একজন আসামি এখনও পলাতক। তাকে ধরতে পারলে বাকি স্বর্ণের খোঁজ জানা যেতে পারে।

শফিকুল ইসলাম বলেন, চুরি হওয়া স্বর্ণ এখনো বিক্রির পর্যায়ে যায়নি। কিছু অংশ গলানো অবস্থায় পাওয়া গেছে। চক্রের সদস্যরা নিজেদের পরিচয় দিতো কৃষিকাজ ও গরুর খামারের কর্মী হিসেবে। কিন্তু গোপনে পরিকল্পিতভাবে বড় ধরনের চুরির প্রস্তুতি নিতো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *