আসামিদের গ্রেপ্তার দাবিতে বংশাল থানার সামনে বিক্ষোভ

পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় টিউশনিতে গিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী জোবায়েদ হোসাইন খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার দাবিতে বংশাল থানার সামনে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। রাত সাড়ে ১২টার দিকে বংশাল থানার সামনে সড়কে আগুন জ্বালিয়ে তারা বিক্ষোভ করেন।

এর আগে রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে তাঁতিবাজার মোড় অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। রাত পৌনে ১২টা পর্যন্ত সেখানে সড়কের মোড় অবরোধ করে রাখেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা, ‘আমার ভাই মরলো কেন প্রশাসন জবাব চাই, ‘আমার ভাই কবরে, খুনী কেন বাহিরে’, ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন। 

পুলিশ হেফাজতে জোবায়েদের ছাত্রী বর্ষা: এদিকে রাত ১১টার দিকে জোবায়েদ হোসাইন বর্ষা নামে যে ছাত্রীকে প্রাইভেট পড়াতেন তাকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ তাকে হেফাজতে নেয়। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। 

রাত ১১টার সময় আরমানিটোলার নূর বক্স রোড়ের নিজ বাসা থেকে বর্ষাকে পুলিশের গাড়িতে তোলা হয়। রাত ১০টা ৫০ মিনিটের দিকে হত্যার শিকার জোবাইদ হোসাইনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মিডফোর্ড হাসপাতালে নেয় পুলিশ। 

সন্দেহভাজন হিসেবে দু’জন শনাক্ত: জুবায়েদ আহমেদকে হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে দু’জনকে প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করেছে পুলিশ। তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) লালবাগ জোনের ডিসি মল্লিক আহসান উদ্দিন সামী রোববার রাতে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমরা দু’জনকে শনাক্ত করতে পেরেছি। তাদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের একাধিক টিম মাঠে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।’

হত্যার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। বিল্ডিংয়ের সকলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আশা করছি, খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘটনার প্রকৃত তথ্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে।’

সিসিটিভির ফুটেজে, বিকেল ৪টা ৩৯ মিনিটে বংশালের নূরবক্স রোডের মকথা এলাকায় কালো টি-শার্ট ও পিঠে কালো ব্যাগ নিয়ে দুই যুবককে দৌড়ে বংশাল রোডের দিকে যেতে দেখা গেছে। পুলিশের ধারণা, তারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকতে পারে।

জানা গেছে, জোবায়েদ হোসাইন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। একই সঙ্গে তিনি কুমিল্লা জেলা ছাত্র কল্যাণ সমিতির সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন।

এক বছর ধরে জোবায়েদ হোসাইন পুরান ঢাকার আরমানীটোলায় ১৫, নুরবক্স লেনে রৌশান ভিলা নামের বাসায় বর্ষা নামের এক ছাত্রীকে ফিজিক্স কেমেস্ট্রি ও বায়োলজি পড়াতেন। ওই ছাত্রীর বাবার নাম গিয়াসউদ্দিন। রোববার বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটের দিকে ওই ছাত্রীর বাসার তিন তলায় খুন হন জোবায়েদ।

বাসার নিচ তলার সিঁড়ি থেকে তিন তলা পর্যন্ত সিঁড়িতে রক্ত পড়েছিল। তিন তলার সিঁড়িতে উপুড় হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায় তাকে। বিকেল ৫টার দিকে পুলিশ ওই বাসায় যায়। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে লালবাগ জোনের ডিসি গিয়ে বর্ষার পরিবার ও বাসার অন্য সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *