রাঙ্গুনিয়া উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের ঠান্ডাছড়ি গ্রামের কিছু যুবক শুদ্ধ সংগীত ছড়িয়ে দিতে ‘রানীরহাট সংগীত নিকেতন’ নামে একটি সংগীত বিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু করেছেন। চা বাগানের পাশে অবস্থিত ঠান্ডাছড়ি দুর্গা মন্দিরে এটি পরিচালিত হচ্ছে। যেখানে বর্তমানে অর্ধশত ছাত্র–ছাত্রী চায়ের গন্ধে সুরের চর্চা করে যাচ্ছেন। যাদের মধ্যে রয়েছে নৃত্য, তবলা, গিটার, হারমোনিয়ামের শিক্ষার্থী। এই বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে রয়েছেন দিপক কুমার তুরী, প্রথিক রায়, জয়তু, অংকন, সুমন এবং সার্বিক দেখাশোনায় লিটন দেব। তাদের এমন উদ্যোগ প্রসঙ্গে জানান, বর্তমান শিশুরা মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়ছে। যা তাদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম শিশুদের মধ্যে উদ্বেগ, বিষণ্নতা, ঘুমের সমস্যা এবং সামাজিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়াও ভাষার বিকাশ এবং মনোযোগের অভাবও দেখা যেতে পারে। মোবাইল ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে শিশুদের মধ্যে যে সমস্যাগুলো দেখা যায়। তাই সুস্থ সংস্কৃতি পারে সমাজকে আলোকিত করতে। এর অংশ হিসেবে এমন সংগীত বিদ্যালয়ের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানান তারা। উল্লেখ্য, এ গ্রামেরই সন্তান সংগীত শিল্পী পিজিত মহাজন বর্তমানে দেশের সংগীত তারকাদের সাথে ঢাকায় কাজ করে যাচ্ছেন। সমপ্রতি যিনি গান করেছেন উপমহাদেশের কিংবদ্বন্তী সংগীতশিল্পী নচিকেতা চক্রবর্তীর সাথে। আসছে তাঁদের যৌথ গান ‘মধ্যবিত্ত’ পিজিত মহাজন অফিসিয়ালে। তিনি এই সংগীত বিদ্যালয় চলমান রাখতে সহায়তা করে যাচ্ছেন। রাঙ্গুনিয়ায় প্রতিষ্ঠিত সংগীত বিদ্যালয়ের অভাবের মাঝে এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে সংগীত শিল্পী পিজিত মহাজন জানান, সংগীত ভালোবাসেনা দুনিয়াতে এমন মানুষ নেই বললেই চলে। এটি আনন্দ, দুঃখ, প্রেম, প্রতিবাদসহ বিভিন্ন অনুভূতি প্রকাশ করার একটি মাধ্যম। সঙ্গীতের মাধ্যমে মানুষ নিজেদের ভেতরের কথা বলতে পারে, আবার অন্যের অনুভূতিও বুঝতে পারে। নচিকেতার বৃদ্ধাশ্রম গানের মাধ্যমে যেমন অনেক সন্তানেরা মা–বাবাকে ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে নিয়েছে, তেমনি ১৯৭১ সালেও স্বাধীনবাংলা বেতার কেন্দ্রের দেশের গান শুনে মুক্তিসেনারা দেশরক্ষায় নিজের জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছে। তাই সংগীত চর্চার এই কেন্দ্রের আলোয় আলোকিত হবে গ্রাম তথা পুরো রাঙ্গুনিয়া এমন প্রত্যাশার কথা জানান তিনি।