নারীদের অনেকেই কুণ্ঠিত থাকেন শরীরের স্থূলতার কারণে। সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে বডি শেমিং বিষয়টি বারবার উঠে এসেছে। বিশেষ করে যখন একজন বিউটিশিয়ান তার অতিরিক্ত স্বাস্থ্য খুব কম সময়ে কমিয়ে ফেলতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেন। এরই মধ্যে একজন বিদেশি শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয় অতিরিক্ত ওজন কমানোর জন্য কার্ব বাদ দিয়ে বেশি বেশি ফল খাওয়ার কারণে। গত সপ্তাহে একটি বিবাহ বিচ্ছেদ হয় স্ত্রীকে ‘মটু’ নাম দিয়ে মোবাইলে সেভ করার কারণে। অতিরিক্ত ওজনের কারণে অনেক ধরনের রোগ সৃষ্টি হয় তো বটেই এতে করে অনেক সময় কনসিভ করতেও সমস্যা হয়। আবার মাতৃত্বজনিত কারণে ওজন বাড়ে এটা খুবই স্বাভাবিক কিন্তু পরবর্তী সময়ে যখন তা আর কমানো যায় না তা নিয়ে বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হয়। একই রকম সমস্যায় পড়েন চল্লিশোর্ধ্ব নারীরা। বিশেষ করে পোস্ট মেনোপজ পিরিয়ডে একবার মুটিয়ে গেলে তা অনেক সময় ডায়েট করেও নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। তাহলে উপায় কী? আজ আমরা তারই একটি উপায় জানবো যার নাম সূর্য মুদ্রা বা অগ্নি মুদ্রা।
যেভাবে মুদ্রা করতে হবে
হাতের অনামিকা আঙ্গুলের মাথা বৃদ্ধাঙ্গুলির গোড়ায় অর্থাৎ রিং ফিঙ্গারের টিপ থাম্ব বেইজে স্পর্শ করতে হবে এবং বৃদ্ধাঙ্গুলির উপরিভাগ বা মাথা দিয়ে অনামিকা আঙ্গুলের পিঠে হালকা চাপ দিতে হবে। এসময় অন্য তিনটি আঙ্গুল তর্জনী, মধ্যমা ও কনিকা সোজা (স্ট্রেইট) থাকবে। এই মুদ্রায় শরীরের পৃথ্বি তত্ত্ব বা আর্থ এলিমেন্ট কমে তাই এর নিয়মিত চর্চায় পৃথ্বি তত্ত্ব বাড়তিজনিত সমস্যায় উপকার পাওয়া যায় তাই একে পৃথ্বি সামক মুদ্রাও বলে। আবার এই মুদ্রা শরীরে অগ্নি উপাদান বৃদ্ধি করে তাই এটি অগ্নি মুদ্রা , অগ্নিবর্ধক মুদ্রা নামেও পরিচিত। এই মুদ্রা সুখাসন বা অন্য কোন (ক্রস লেগ) সহজ আসনে বসে, হাতের পিঠ হাঁটুর ওপর রেখে চর্চা করতে হবে। যদি এই মুদ্রাটি সূর্যোদয়ের সময়ে করা যায় এর প্রভাব অনেক বেশি হয়। নিয়মিত ১৫ মিনিট করে চর্চা করা যায় তবে ক্ষেত্রবিশেষে ২৫ থেকে ৩৫ মিনিট পর্যন্তও বাড়ানো যেতে পারে।
সূর্য মুদ্রার উপকারিতা
বিপাক উদ্দীপক: এই মুদ্রা শরীরে অগ্নি উপাদান বৃদ্ধি করে, রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে বিপাককে উদ্দীপিত করে এবং হজমে সহায়তা করে।
ওজন কমায় : শরীরের মেটাবলিজমের ওপর কাজ করে, শরীরের ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে। এটি ‘ওয়েট লস মুদ্রা’ হিসেবে বেশি জনপ্রিয়, ন্যাচারাল ফ্যাট বার্নারও বলা যায়। তাই এই মুদ্রা ওবেসিটির জন্য ভালো। এছাড়াও মাতৃত্বজনিত কারণে যে ওজন বৃদ্ধি পায় তা কমাতে এই মুদ্রা খুবই উপকারি।
চোখের দৃষ্টি : অগ্নি তত্ত্ব দৃষ্টিশক্তির সাথে সম্পর্কিত। এই মুদ্রা চোখের দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে।
লিভার সুস্থ রাখে: লিভারের ব্লকেজ দূর করতে সাহায্য করে তাই লিভারের সুস্থতায় এর ভূমিকা রয়েছে।
কলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ: যদি প্রতিদিন ২০ মিনিট করে দিনে দু’বার নিয়মিত চর্চা করা যায় তাহলে কলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রিত হয়।
শরীরের ফুলে যাওয়া কমায়: শরীরের অতিরিক্ত ফ্লুইটিডি এবং সোয়ালিং অর্থাৎ আমরা যাকে বলি পানি এসে ফুলে গেছে তা কমাতে ভালো কাজ করে।
যারা চর্চা করবেন না: যাদের অতিরিক্ত পিত্ত এবং কফের সমস্যা আছে তারা এই মুদ্রা চর্চা থেকে বিরত থাকাই ভালো।