‘মৃত্যুর আগে ছেলের হত্যাকারীদের ফাঁসি দেখতে চাই’

facebook sharing button
copy sharing button
whatsapp sharing button
linkedin sharing button

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত আবু রায়হান রাহিমের (২৯) মা রওশন আরা বেগম ছেলে হত্যার বিচার দেখে যেতে যান। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, মৃত্যুর আগে ছেলের হত্যাকারীদের ফাঁসি দেখতে চাই।

আবু রায়হান রাহিম বগুড়ার দুপচাঁচিয়া পৌর এলাকার বাসিন্দা। তিনি দুপচাঁচিয়া উপজেলা যুবদলের সদস্য ছিলেন।

পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে মা রওশন আরা বেগম, স্ত্রী দিলরুবা খাতুন ও চার বছরের ছেলে আবু সোয়াইবকে নিয়ে তাদের পরিবার এখন দিশাহারা হয়ে পড়েছেন।

সোয়াইবের নামে সরকার ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া তার স্ত্রী দিলরুবা খাতুনকে দুপচাঁচিয়া পৌরসভায় অস্থায়ী ভিত্তিতে চাকরি দেওয়া হলেও যে বেতন পান, তা দিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

‘মৃত্যুর আগে ছেলের হত্যাকারীদের ফাঁসি দেখতে চাই’

আজও কান্না থামেনি জুলাই শহীদ রুশোর মা-বাবার

জানা গেছে, দুপচাঁচিয়া উপজেলা যুবদলের সদস্য ও হক্কানী টিস্যু কোম্পানির সেলসম্যান আবু রায়হান রাহিম জুলাই-আগস্টে আন্দোলন চলাকালে মাঠে নামেন। গত বছর ৪ আগস্ট সকালের দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মিছিল বের করে। সে মিছিল দুপচাঁচিয়া থানা ঘেরাও করতে গেলে পুলিশ গুলিবর্ষণ করলে রাহিমের দুই পা গুলিবিদ্ধ হয়।

এ সময় কাহালুর মুনিরুল ইসলাম মুনির (২২) নামে এক ছাত্র ঘটনাস্থলেই মারা যান। রাহিমকে প্রথমে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। ৭ আগস্ট অস্ত্রোপচার করে তার ডান পা কেটে ফেলতে হয়। চিকিৎসকরা বাম পা থেকে গুলি বের করলেও ৯ আগস্ট সকালের দিকে তিনি মারা যান।

এ ব্যাপারে রাহিমের মা ১৭ আগস্ট গভীর রাতে দুপচাঁচিয়া থানায় সাবেক পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বেলাল হোসেন প্রামাণিককে প্রধান আসামি করে ২২ জনের নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাত ৫০ থেকে ৬০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

রওশন আরা বেগম বলেন, আমার বয়স হয়েছে। মৃত্যুর আগে আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার দেখে যেতে চাই।

আবু রায়হান রাহিমের স্ত্রী দিলরুবা খাতুন বলেন, পাঁচ বছরের সন্তান বাবা বাবা বলে ডাকে। ওকে সান্ত্বনা দিতে পারি না। আমার সন্তানের ভবিষ্যতে কি লেখা আছে আমি জানি না। তবে আমার চাওয়া আমার চাকরিটা স্থায়ী হলে পরিবার- পরিজন নিয়ে ভালোভাবে জীবনযাপন করতে পারতাম।

দুপচাঁচিয়া থানার ওসি ফরিদুর রহমান কালবেলাকে জানান, রাহিম হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *