বিদায়ের সময় ‘টাটা’ বলার রীতি কিভাবে শুরু হলো?

বিদায়ের সময় আমরা প্রিয়জন, বন্ধু বা সহকর্মীকে প্রায়ই বলি ‘টাটা’। এটি এতটাই সাধারণ হয়ে গেছে যে, বয়স বা প্রজন্ম নির্বিশেষে সবার মুখে শোনা যায়। কিন্তু প্রশ্ন ওঠে, কেন এই শব্দটি এত জনপ্রিয় হয়েছে?

ভাষাবিদদের মতে, ‘টাটা’ মূলত ব্রিটিশ ইংরেজি থেকে এসেছে। এটি আনুষ্ঠানিক ‘গুডবাই’ বা ‘ফেয়ারওয়েল’-এর তুলনায় অনেক বেশি অন্তরঙ্গ ও বন্ধুত্বপূর্ণ। ১৯শ শতকের শেষ দিকে ইংল্যান্ডের ককনি (Cockney) উপভাষায় শব্দটির প্রচলন শুরু হয়। এরপর এটি পুরো ব্রিটিশ সমাজে ছড়িয়ে পড়ে এবং ব্রিটিশ উপনিবেশিক প্রভাবের কারণে ভারতীয় উপমহাদেশে, বিশেষ করে ভারত, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

ভাষাবিদরা বলছেন, শব্দটির সবচেয়ে বড় আকর্ষণ এর সহজ উচ্চারণ। শিশুদের মুখে উচ্চারণ সহজ হওয়ায় প্রাথমিকভাবে বাবা-মা বিদায়ের সময় বলে থাকেন, “বলো, টাটা।” শিশুরা হাসিমুখে হাত নাড়িয়ে এই শব্দটি উচ্চারণ করে, যা এক ধরণের স্নেহমিশ্রিত বিদায়ের রীতি হিসেবে পরিণত হয়েছে।

একটি মজার বিষয় হলো, অনেক ভাষায় ‘টাটা’ শব্দের অর্থ ‘বাবা’। তাই শিশুরা যখন ‘টাটা’ বলে বিদায় জানায়, এটি একদিকে আবেগ প্রকাশ করে, অন্যদিকে ধ্বনিগতভাবে সহজ একটি বিদায়ের ইঙ্গিত দেয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই মিষ্টি ধ্বনি বিদায়ের প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

ব্রিটিশ উপনিবেশের যুগে এই শব্দটি দ্রুত উপমহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় ভাষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে ‘টাটা’ এখন এক বন্ধুত্বপূর্ণ ও অনানুষ্ঠানিক বিদায়ের সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে।

ভাষাবিদরা আরও বলেন, আনুষ্ঠানিক পরিবেশে ‘গুডবাই’, ‘ফেয়ারওয়েল’ বা ‘বিদায়’ ব্যবহৃত হয়। কিন্তু বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে ‘টাটা’, ‘বাই’ বা ‘সি ইউ লেটার’-এর মতো শব্দই আন্তরিকতা প্রকাশ করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *