নানা ভিটামিন, খনিজ আর অ্যান্টি–অক্সিডেন্টে ভরপুর হওয়ায় বিটরুটকে কেউ কেউ একপ্রকার সুপারফুড হিসেবে বিবেচনা করেন। তাই প্রায় প্রতিদিনই বিটরুট খাচ্ছেন অনেকে। তরকারি ও সালাদের পাশাপাশি বিটরুটের জুসও খাচ্ছেন অনেকে। বিটরুটের গুঁড়া কিনে গুলিয়ে খাওয়ার চলও বেড়েছে। কিন্তু শরীরে পুষ্টির চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য না রেখে প্রয়োজনের অতিরিক্ত বিটরুট খাওয়াও ভালো নয়। আসুন জেনে নেওয়া যাক, বিটরুটের যত উপকারিতা এবং অতিরিক্ত বিটরুট খাওয়ার নানা রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্বন্ধে।
উপকারিতা
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে বিটরুট। যাঁরা উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন, তাঁদের জন্য এটি উপযোগী খাবার। তবে খেতে হবে পরিমিত। বিটরুটে প্রচুর পরিমাণে নাইট্রেট রয়েছে, যা শরীরের রক্তনালি বা দেহকোষগুলোকে শিথিল করে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।খেলাধুলার করেন, এমন ব্যক্তিদের শক্তি বৃদ্ধি করে বিটরুট। নিয়মিত বিটরুট খেলে শরীরে অক্সিজেনের ব্যবহার বৃদ্ধি পায়, মাংসপেশি সবল হয়।প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকায় বিটরুট খুব সহজেই কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় করে।
বিটরুটের যে আকর্ষণীয় রং, তার পেছনে আছে অত্যন্ত শক্তিশালী একটি অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট, সেটা হচ্ছে বেতালিন। এটি আমাদের শরীরে প্রদাহ নিয়ন্ত্রণ করে। এর ফলে বিভিন্ন জটিল হৃদ্রোগ, ক্যানসার ইত্যাদির ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়।মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে বিটরুট।ফাইবারের অন্যতম উৎস বিটরুট ওজন নিয়ন্ত্রণেও বিশেষভাবে কার্যকর। শরীরে বিভিন্ন ডিটক্সিফাইং এনজাইম তৈরি করে যকৃৎকে ডিটক্সিফাই করে।
বিটরুটের অনেক উপকার। তবে খেতে হবে প্রয়োজন ও পরিমাণ বুঝে। বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে বিটরুট এড়িয়ে চলাই ভালো।কিডনিতে সমস্যা থাকলে বিটরুট খাওয়ার আগে সাবধান হতে হবে। বিটরুটে বিদ্যমান অক্সালেট শরীরের ক্যালসিয়ামের সংস্পর্শে এসে কিডনিতে ক্যালসিয়াম অক্সাইড নামে পাথর তৈরি করতে পারে। তাই যাঁদের আগে থেকেই কিডনির সমস্যা আছে বা কিডনিতে পাথর আছে, বিটরুট খাওয়ার ব্যাপারে তাঁদের অবশ্যই সতর্ক হতে হবে।প্রচুর ফাইবার থাকায় কোনো কোনো ক্ষেত্রে পরিপাক ক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটায় বিটরুট। বমি বমিভাব, পেটে গ্যাস হওয়া, ডায়রিয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
অস্টিওপোরোসিস রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির বিটরুট খাওয়া যাবে না। কেননা হাড়ে ক্যালসিয়াম শোষণে যথেষ্ট পরিমাণে বাধা সৃষ্টি করে বিটরুট।যাঁরা নিম্ন রক্তচাপে ভুগছেন, বিটরুট খেলে রক্তচাপ আরও কমে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।বিটরুট খেলে কারও কারও ক্ষেত্রে অ্যালার্জি দেখা দেয়। সামান্য অ্যালার্জির আভাস পেলেও বিটরুট খাওয়া যাবে না।যকৃৎ ও কিডনির রোগের বিশেষ কিছু ওষুধের সঙ্গে বিটরুট না খাওয়াই শ্রেয়। এ ক্ষেত্রে যাঁরা যকৃৎ বা কিডনি রোগে আক্রান্ত, তাঁদের ওষুধ চলমান অবস্থায় বিটরুট খেলে কোনো ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে কি না, খেয়াল রাখতে হবে।যাঁরা অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসে ভুগছেন, তাঁদের বিটরুট খাওয়ার আগে সাবধান হতে হবে।