সংবিধান সংস্কারের পদ্ধতি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য বিভ্রান্তিকর: রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন

জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সংবিধান সংস্কারের পদ্ধতি নিয়ে বিভ্রান্তিকর ও অসম্পূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন। তারা মনে করে, প্রধান উপদেষ্টা সংবিধান সংস্কারের যে পদ্ধতির কথা বলেছেন, তা জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থী।আজ মঙ্গলবার রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়। গত ৬ জুন জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা। সেই ভাষণে সংবিধান সংস্কারের পদ্ধতি সম্পর্কে জাতিকে সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে প্রধান উপদেষ্টা ব্যর্থ হয়েছেন বলেও মনে করে তারা।

বিজ্ঞপ্তিতে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন বলেছে, সংসদের প্রথম অধিবেশনে সংবিধান সংস্কারের জন্য বিল উত্থাপন করতে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে অঙ্গীকার আদায়ের যে পরামর্শ প্রধান উপদেষ্টা জনগণকে দিয়েছেন, তা বিভ্রান্তিকর এবং জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থী।জনগণের মুক্তির জন্য প্রথমে সংবিধানের সংস্কার এবং পরে সেই পরিবর্তিত সংবিধানের আলোকে সরকার পরিচালনার জন্য জাতীয় সংসদ গঠনের নির্বাচন আয়োজন করা এই অন্তর্বর্তী সময় থেকে উত্তরণের একমাত্র ন্যায্য উপায় বলে মনে করে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।

বিদ্যমান সংবিধান অনুযায়ী সংবিধান সংশোধনের যে ক্ষমতা সংসদের কাছে দেওয়া আছে, সেই পদ্ধতির অপব্যবহারের সঙ্গে বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্র বিস্তারের সম্পর্ক ওতপ্রোতভাবে জড়িত বলে মনে করে দলটি। তারা বলেছে, এ দেশের জনগণ সাংবিধানিক স্বৈরতন্ত্র উচ্ছেদের জন্য অভ্যুত্থান করেছে, আবারও সংসদীয় স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য নয়। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টা সংবিধান সংশোধন এবং সংবিধান সংস্কারের পার্থক্যকে গুলিয়ে ফেলেছেন।

নির্বাচনসংক্রান্ত সংশয় দূর করার জন্য ১৯৭০ সালের মতো একসঙ্গে সংবিধান সংস্কার সভা এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচন করার দাবি জানিয়েছে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন। তারা বলেছে, অভ্যুত্থান–পরবর্তী জন–আকাঙ্ক্ষা পূরণে সংবিধান সংস্কারের এই গুরুদায়িত্ব কোনো অজুহাতেই জাতীয় সংসদের কাছে দেওয়া যাবে না। যেসব রাজনৈতিক দল ও সংগঠন সত্তর সালের মতো একই ভোটে সংবিধান সংস্কার সভা এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচন চায়, তাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তারা।শুধু সংসদ নির্বাচনের সিদ্ধান্তকে আত্মঘাতী উল্লেখ করে তা থেকে সরে আসতে এবং ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা সভায় এ বিষয়ে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলাপের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।

প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের যে সময় ঘোষণা করেছেন, তাতে নির্বাচন নিয়ে অস্পষ্টতা অনেকাংশে দূর হয়েছে উল্লেখ করে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন বলেছে, তবে এপ্রিল মাসের আবহাওয়া, রমজান, এইচএসসি পরীক্ষা ইত্যাদির কারণে এ সময়ে নির্বাচন সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করা কতটা সম্ভব, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।রাখাইনে সহায়তা পাঠাতে করিডর না দেওয়ার প্রসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করে জানানোয় জনমনে কিছুটা স্বস্তি দেখা দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন। তারা বলেছে, কিন্তু বন্দরের ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার ভাষা রাজনৈতিক মহলে অস্বস্তি তৈরি করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *