গাজায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস যুদ্ধবিরতি মেনে চললেও মানছে না ইসরাইল। তীব্র সামরিক অভিযানের মধ্যেই অধিকৃত পশ্চিম তীর নিজেদের ভূখণ্ডে অন্তর্ভুক্ত করতে একটি বিল পাস করেছে ইসরাইলের পার্লামেন্ট। এর পরপরই ফিলিস্তিন ইস্যুতে ইসরাইলকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই জানা গেল—ভয়াবহ সুনামির কবলে পড়েছে ইসরাইল!
ইসরাইলি সংসদ সদস্য গিলাদ কারিব এমন আশঙ্কাজনক তথ্য প্রকাশ করেছেন। ইরানি সংবাদ মাধ্যম মেহের নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, ইসরাইলি পার্লামেন্ট নেসেটে সম্প্রতি প্রকাশিত এক বিশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে—২০২২ সাল থেকে ২০২৪ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন ১ লাখ ২৫ হাজারেরও বেশি ইসরাইলি নাগরিক। মানব সম্পদের দিক থেকে এত স্বল্প সময়ে এটি ইসরাইলের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ক্ষতি বলে মনে করা হচ্ছে।
গত ২০ অক্টোবর ইসরাইলি পার্লামেন্টের ইমিগ্রেশন ও অ্যাবজরপশন কমিটিতে উপস্থাপিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২২ সালের শুরু থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত দেশ ত্যাগ করেছেন ১ লাখ ২৫০ ইসরাইলি। এদের বেশিরভাগই স্থায়ীভাবে বিদেশে চলে গেছেন এবং ফিরে আসার কোনো পরিকল্পনাও নেই। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গাজায় ইসরাইলের গণহত্যামূলক যুদ্ধ এই স্থায়ী দেশত্যাগের প্রবণতা আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
কমিটির চেয়ারম্যান গিলাদ কারিব বলেন,
“এটি কেবল অভিবাসনের ঢেউ নয়, এটি এক প্রকার সুনামি—যেখানে ইসরাইলিরা দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।”
কনেসেট রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন সেন্টারের প্রতিবেদন অনুযায়ী—
- ২০২২ সালে দেশ ছেড়েছেন প্রায় ৫৯,৪০০ জন,
- ২০২৩ সালে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৮২,৮০০ জনে,
- ২০২৪ সালের প্রথম আট মাসেই প্রায় ৫০,০০০ জন দেশ ত্যাগ করেছেন।
এর তুলনায় ২০০৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত দীর্ঘমেয়াদী অভিবাসনের বার্ষিক গড় সংখ্যা ছিল মাত্র ৪০,৫০০ জন।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় ব্যাপক আগ্রাসন চালায় ইসরাইল, যেখানে প্রায় ৭০ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হন। দুই বছরের মাথায় যুদ্ধবিরতি হলেও দখলদার ইসরাইল তা অমান্য করে বেসামরিক জনগণের উপর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে সেখানে শান্তির সম্ভাবনা ক্রমেই অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে।