চীনের ট্রাম্প!

চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিশাল শহর ছোংছিং। জনসংখ্যা প্রায় ৩ কোটি ২০ লাখ। সেখানকার এক বিজনেস ব্যবস্থাপক রায়ান চেন এমন নিখুঁতভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনুকরণ করেন যে, রেস্তোরাঁয় লোকেরা খাওয়ার মাঝপথে থেমে গিয়ে কৌতূহলভরে তার দিকে তাকায়। অক্টোবরে দক্ষিণ কোরিয়ায় ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের বহু প্রতীক্ষিত বৈঠক হচ্ছিল। আর চেনের জনপ্রিয়তা তখন রাস্তায় রাস্তায় স্পষ্ট হয়ে উঠছিল।
ভক্তরা তাকে ঘিরে ধরলো যেন হলিউডের কোনো তারকা। একের পর এক মোবাইল ফোন সামনে ধরা, গ্রুপ সেলফি, আর প্রশ্নÑ আপনি কি সেই ভয়েসটা করবেন? এরপরই শুরু হয় তার ‘ট্রাম্প শো’।
ছোংছিংয়ের বিখ্যাত হটপট? দারুণ, সবচেয়ে ভালো, অবিশ্বাস্য! চকমকে স্কাইলাইন? অবিশ্বাস্যভাবে সুন্দর! আমাকে জিজ্ঞেস করুন আজ কেমন লাগছে? আমি বলব, আমি দারুণ ফিল করছি!Ñ ট্রাম্পের মতোই আত্মবিশ্বাসী, কিছুটা রসিকতা ও কিছুটা গম্ভীর সুরে বললেন চেন।
অদ্ভুত নিখুঁত সেই নকলের পেছনের গল্পটা কিন্তু শুধুই এক হারানো বাজি। চেন বলেন, আমি বন্ধুর সঙ্গে ‘ট্রুথ অ্যান্ড ডেয়ার’ খেলছিলাম, হেরে যাই। এরপর সে আমাকে ট্রাম্পের নকল করে একটা ভিডিও বানিয়ে পোস্ট করতে বলে দেখি কেমন যায়।
এরপর থেকেই চীনে মিলিয়ন মানুষ তার ভিডিও দেখতে থাকে। চেন এখন চীনের অন্যতম জনপ্রিয় ইংরেজি কনটেন্ট নির্মাতা, ইনস্টাগ্রাম ও দউইনে (চীনের টিকটক) তার দুই মিলিয়নের বেশি অনুসারী।
মজার বিষয় হলো, তিনি কখনোই যুক্তরাষ্ট্রে যাননি অথচ আমেরিকান মিডিয়ার ছন্দটা যেন হাতের মুঠোয়। তিনি ট্রাম্পের কণ্ঠে নিজের শহর ছোংছিং ও চীনকে প্রচার করেন পর্যটন গন্তব্য হিসেবে। তবে, চীনের সেন্সর-নিয়ন্ত্রিত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও তৈরি করা মানে একটা সূক্ষ্ম ভারসাম্য বজায় রাখা।
তিনি বলেন, আমি রাজনীতি থেকে দূরে থাকতে চেষ্টা করি। আমি শুধু আমাদের সংস্কৃতি, খাবার, আর চীনের বাস্তব দিকটা দেখাই। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *